Friday, July 22, 2011

দ্য প্রফেট অনুবাদ-19



কদাচ নগরভ্রমী এক সন্ন্যাসী বলল, আনন্দসুখ বিষয়ে তুমি আমাদের কিছু বল
জবাবে সে বলল ;


আনন্দ হ’ল মুক্তির সঙ্গীত, স্বাধীনতা বা মুক্তি নয়
আনন্দ হ’ল তোমাদের ইচ্ছাফুল, ফলবতী ইচ্ছা নয়
আনন্দ হ’ল গভীরতার সর্ব্বোচ্চতায় আহ্বায়ন, গভীরও নয় বা সু-উচ্চও নয়
আনন্দ হ’ল যেন পিঞ্জরবনদ্ধ আকাশপাখী গগননিস্তারী, মহামণ্ডলে পরিবেষ্টিত হ’য়ে নয়



তোমাদের আনন্দসুখ আসলে তোমাদের মুক্তির সঙ্গীতে

হাদিত বোধ হয় আমার তোমরা যদি হৃদয়ের পূর্ণতায় সেই গান গাইতে পারো, কিন্তু চাই না আমি তোমরা তোমরা তোমাদের হৃদয়মন খুইয়ে ফেলো সেই সঙ্গীতে (অসম্বিতে)

তোমাদের যুবাকিশোররা কেউ কেউ যেন একান্তই আনন্দসন্ধানী, কেনই বা তারা ধিক্কৃত তিরস্কৃত
আমি তাদের অবিচার বা তিরস্কৃত করি না, আমি তাদের আনন্দসন্ধানী হতেই বলি নিয়ত প্রতিনিয়ত
তারা আনন্দের সন্ধান পাবে, তবে তাকে একা পাবে না তারা
তারা সাত সহদরা, কণিষ্ঠজনা আনন্দের চেয়েও শোভনসুন্দরা
তোমরা কি সেই জনের কথা শোননি
যে শিকড়ের খোঁজে মাটী খুঁড়তে খুঁড়তে গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছিল, (তোমরা কি সেই জনের কথা শোননি)?

তোমাদের অগ্রজদের কেউ কেউ আনন্দপ্রমোদকে স্মরণ করেন বীতস্পৃহায়, অনুশোচনা করেন পানোন্মত্ত অবস্থায় দু®কৃত কর্ম্মের মতন
কিন্তু সেই অনুশোচনা মনের মেঘময়তা, তাতে নি®কৃত হয় না তা যথা মতন
তাদের কৃতজ্ঞতায় স্মরণে রাখা উচিত তাদের সেই আনন্দপ্রমোদ, তাতেই তারা গ্রীষ্মের ফসল ঘড়ে তুলবে
তবুও তারা যদি অনুশোচনায় স্বস্তি বোধ করে, তাতেই স্বস্তি বোধ করুক তারা তবে।
এবং তোমরা যারা যুবাকিশোর নও যে আনন্দসন্ধানী হবে, বৃদ্ধও নও যে অনুশোচনায় স্মৃতিদুর্ভার হবে
তারা আনন্দ সন্ধান ও স্মরণের শঙ্কায় আনন্দ পরিহার করে চলে পাছে তাদের জীবাত্মা কশাহত বা রুষ্ঠ হয় (নীরবে)
এই পরিহারেই তাদের আনন্দ
এভাবেই তারাও গুপ্তধনের সন্ধান পায়, শিকড়ের খোঁজে কম্পিত হস্তে মাটী খোঁড়াতেই সেই আনন্দ।
তোমরা বল এমন কে আছে যে তার জীবাত্মাকে আহত করতে চায়?
নাইটেঙ্গল কি নিশীথরাত্রির নৈঃশব্দকে কিংবা জোনাকি কি নত্রকে প্রতিঘাত করতে চায়?
অগুনের শিখা কি ধোঁশাকে নিঃশেষ করতে পারে?
তোমরা কি ভাবো জগতচিদাত্মা অজলচল জলাশয় যে কাষ্ঠদণ্ড তাকে বিপাকে ফেলতে পারে?

তোমরা আত্মসুখকে পরিহার করে অযথা-ই তোমাদের সত্তার অন্তঃপুরে সেই অভিলাষকে সড়িয়ে রাখা
কেবলতে পারে আজ যা বাকী রয়ে গেল আগামিকালের প্রতীায় তার আর কেনই বা পড়ে থাকা?
তোমাদের দেহও জানে তার উত্তরাধিকারীকে, জানে তার ন্যায্য চাহিদা কী - মানে না কোন বঞ্চনা
তোমাদের দেহ তো তোমাদের আত্মার বাদ্যবীণা
তোমাদেরই নিঃসৃত করতে হবে তার সঙ্গীত মধুর অথবা চিতকৃত বেসুরো সুর
তোমাদের অন্তরমনকে তোমরা জিজ্ঞাসা কর, ”আমরা কিভাবেই বা বিচার করব আনন্দে কোনটা মধুর আর কোনটাই বা নয় মধুর?”
তোমরা তোমাদের শস্যেক্ষেত্রে যাও, বাগিচায় যাও, তাহলেই তোমরা জানতে পারবে যে ফুলে ফুলে মধু আহরণ করাতেই মধুমকিাদের আনন্দসুখ
আর মধুমকিাদের তার মধু উজার করে দেওয়াতেই ফুলের মধুর সুখ
ফুলদল হ’ল মধুমালিদের প্রাণঝর্ণা
আর মধুমকিারা ফুলদলের পরম প্রেমের সংবাহক দূত (মধুবর্ণা)
এবং মধুমকিারা আর ফুলদল তারা উভয়েই উভয়ের চাহিদা ও পরিতৃপ্তির আদানপ্রদান পরম আনন্দসুখ।

হে আরফালিজের জনপদবাসীগণ, ফুলদল ও মধুমকিাদের মতনই হউক্ তোমাদের আনন্দসুখ।

সূত্র:দরবেশ,সামহোয়ারইনব্লগ.কম

No comments:

Post a Comment