Friday, July 22, 2011

দ্য প্রফেট অনুবাদ-13

১৫
একজন রমণী বলল, দুঃখযন্ত্রণা সম্পর্কে আমাদের তুমি কিছু বল
এবং সে বলল :
তোমাদের বোধবুদ্ধি যে কোরকে উপ্ত তাকে নিঙরেই তোমাদের দুঃখযন্ত্রণার প্রকাশ
প্রস্তরকঠিন ফল ভেঙ্গে বীজহৃদয় যেমন সূর্য্যবীর্য্যে নিষিক্ত হয় তেমনই তোমাদের আর্ত যন্ত্রণার আত্মপ্রকাশ।


তোমাদের প্রাত্যহিক জীবনরহস্যে তোমাদের হৃদয় কি বিষ্ময়ে আত্মহারা হয়? ঠিক তেমনই তোমাদের দুঃখযন্ত্রণার আর্তি তোমাদের আনন্দসুখের চেয়ে কেনই বা কম বিষ্ময়কর হবে?
তোমাদের চতুস্পার্শ্বের ভূমিক্ষেত্রের ঋতু আবর্তনের মতন তোমাদের হৃদয়ের ঋতুর অভিবর্তনে তোমরাও তেমনই সহজে আবর্তিত হবে
এবং দুঃখশোকের শীত তেমনই সহজে প্রশমিত হবে ঠিক তোমরা দেখবে।
তোমাদের দুঃখযন্ত্রণার অনেকাংশই তোমাদের স্বেচ্ছাপ্রণোদিত
তোমাদের অসুস্থ সত্তা হাকিমবৈদ্যর বিষৌধি বিধানেই হয় প্রশমিত
তোমরা তাকে বিশ্বাস করবে, নীরব প্রশস্তিতে তার দ্রব্যগুণ পান করবে।
তার হাত রূঢ় অঙ্কুশ হলেও তা তো সেই অদৃশ্য আলোকেতিশ্বরের সুকোমল করপুটের তলবে
তিনি যে পানভাণ্ডে পান করান তাতে তোমাদের ওষ্ঠ দগ্ধ হলেও
সেই কুম্ভকারের ইচ্ছায় গড়া যার মাটী সিক্ত নিষিক্ত তাঁর পবিত্র অশ্রুজলেও।


১৬.
একজন পুরুষ বলল, আমাদের আত্মজ্ঞানে আত্মস্থ করে তুমি কিছু বল
এবং জবাবে সে বলল :

তোমাদের নীরব নিভৃতিতে দিবসরাত্রির রহস্য উদ্ঘাটিত হয়
আর তোমাদের হৃদয়লদ্ধ অভিজ্ঞান শুনবে বলে তোমাদের কর্ণ তৃষ্ণায় ব্যাকুলিত হয়
তোমাদের চিন্তামগ্নতায় তোমরা যা বিদিত হও তা মুখর ভাষায় বিদিত হয়
তোমাদের অঙ্গুলিতেই তোমাদের নিরাবরণ স্বপ্ন স্পর্শিত হয়।

এবং সেটাই সমুচিত হবে
তোমাদের আত্মার সুপ্ত নির্ঝরঝর্ণা জেগে উঠে মর্ম্মর ধ্বনিতে সমুদ্রসঙ্গমে মিলিত হবে
এবং তোমাদের অন্তর্গভীরের ঐশ্বর্য্যভাণ্ডার যত তোমাদের দৃষ্টিচোক্ষে উদ্ভাসিত হবে।
কিন্তু সেই অজ্ঞাত সম্পদের পরিমাপের কোন তুলাদণ্ড নাই
তোমরা কখনও কোন কাষ্ঠদণ্ড বা শব্দভেদী লগী দিয়ে তোমাদের জ্ঞানের গভীরতার সন্ধান করবে না তাই
কেন না তোমাদের আত্মা হ’ল অসীম অনন্ত সমুদ্র এক অতলান্ততায়।

বোলো না কখনও ’অনখণ্ড সত্যের সন্ধান পেয়েছি আমি’, বরং বোলো ’এক খণ্ড সত্যের সন্ধান পেয়েছি আমি’
বোলো না ’আত্মার পরিক্রমপথ খুঁজে পেয়েছি আমি’
বরং বোলো ’আমার চলার পথেই আমার আত্মার দেখা পেয়েছি আমি’
কেন না আত্মা সতল পথেই পর্য্যগামী
কেন না আত্মা কখনই সরল পথ বরাবর চলাচল করে না বা সোজা সটান নলখাগড়ার মতন বেড়ে ওঠে না
হাজারো পদ্মপাপড়ি মেলে আত্মা নিজেই উন্মোচিত হয়,(এমনই তার নির্ঘোষণা)।





সূত্র:দরবেশ.সামহোয়ারইনব্লগ.কম

No comments:

Post a Comment